খালি পেটে ঘি খেয়েই দেখুন!

 



অনেকেই মনে করেন যে ঘি খাওয়া নাকি শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক, যা একেবারেই ঠিক নয়। কারণ একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে নিয়মিত এক চামচ করে ঘি খেলে একাধিক শারীরিক উপকার পাওয়া যায়। আর যদি খালি পেটে ঘি খেতে পারেন, তাহলে তো কথাই নেই! 

আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, ঘি-এর ভেতরে উপস্থিত একাধিক উপকারী উপাদান একদিকে যেমন শরীরে গঠনে সাহায্য করে। তেমনি দেহের প্রতিটি অঙ্গকে এতটা শক্তিশালী করে তোলে যে নানাবিধ রোগ ভোগের আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে মেলে আরও অনেক উপকারিতাও। 

কোষেদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায় : নানা সময় হওয়া একাধিক গবেষণা অনুসারে নিয়মিত ঘি খাওয়া শুরু করলে কোষেদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে সামগ্রিকভাবেই দেহের সচলতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে রোগভাগের আশঙ্কাও যায় কমে। শুধু তাই নয়, নতুন কোষেদের জন্ম যাতে ঠিক মতো হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে ঘি। ফলে যে কোনও ধরনের শারীরিক ক্ষত সেরে উঠতে সময়ই লাগে না।

ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় : কোনও মানুষের শরীর ভিতর থেকে যতটা স্বাস্থ্যকর থাকে, তার স্কিন তত সুন্দর হয়। তাই দামি দামি কসমেটিক্স ব্যবহার করে কোনও ফল পাওয়া যায় না, যদিনা শরীরকে ভিতর থেকে সুস্থ রাখতে পারা যায় তো। আর এই কাজে ঘি যে আপনাদের নানাভাবে সাহায্য করতে পারে, সে বিষয়ে কোনও সন্দহ নেই। কারণ একথা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়ে গেছে যে প্রতিদিন খালি পেটে ঘি খাওয়া শুরু করলে শরীরে ভিতর থেকে শক্তিশালী হয়ে ওঠে, সেই সঙ্গে ত্বকের অন্দরে কোলাজেনের উৎপাদন বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের সৌন্দর্য বাড়তে একেবারেই সময় লাগে না।

আর্থ্রাইটিসের মতো রোগ দূরে থাকে : খালি পেটে ঘি খাওয়া শুরু করলে শরীরে বিশেষ কিছু উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যা একদিকে যেমন জয়েন্টের সচলতাকে বাড়িয়ে তোলে, তেমনি ক্যালসিয়ামের ঘাটতি যাতে না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আর্থ্রাইটিসের মতো হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। প্রসঙ্গত, ঘিয়ে উপস্থি ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডও শরীরের গঠনে নানাভাবে ভূমিকা পালন করে থাকে।

রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় : গত এক দশকে আমাদের দেশের যুবসমাজের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পয়েছে। আর এমন পরিস্থিতির পিছনে অনেকাংশেই হাত রয়েছে কোলেস্টেরলের। তাই তো চিকিৎসকেরা ২৫-৫০ বছর বয়সিদের নিয়মিত খালি পেটে ঘি খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। কারণ এমনটা করলে শরীরে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টেরলকে একেবারে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে চলে আসে। ফলে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে।

ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায় : মস্তিষ্কের সচলতা বজায় রাখতে উপকারি ফ্যাটের প্রয়োজন পরে। আর যেমনটা আপনারা ইতিমধ্যেই জেনে ফেলেছেন যে ঘিয়ে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় এসেনশিয়াল ফ্যাট, যা ব্রেন সেলেদের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর একবার ব্রেন সেলেরা ঠিক মতো কাজ করা শুরু করে দিলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতেও সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, ঘিয়ে উপস্থিত প্রোটিন, নিউরোট্রান্সমিটাররা যাতে ঠিক মতো কাজ করতে পারে, সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্মৃতিশক্তির বৃদ্ধি ঘটতে সময় লাগে না। 

দুধের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে ঘি : বেশ কিছু কেস স্টাডিতে দেখা গেছে যারা একেবারেই দুধ খেতে পছন্দ করেন না, তাদের শরীরে উপকারি প্রোটিনের ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীর ভিতর থেকে ভাঙতে শুরু করে। এখন প্রশ্ন হল এমন ক্ষেত্রে কী করণীয়? কিছুই না, নিয়মিত নানাভাবে ঘি খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন প্রোটিনের ঘাটতি দূর হতে সময়ই লাগবে না। সেই সঙ্গে দেহের অন্দরে অন্যান্য ভিটামিন এবং খনিজের চাহিদাও পূরণ হবে। 

উপকারি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ : ঘিয়ে রয়েছে কে২ এবং সিএলএ নামক দুটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বের করে দেওয়ার মধ্যে দিয়ে ক্যান্সার সেলেদের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কাও কমায়।

ওজন কমাতে সাহায্য করে : একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ঘিয়ের অন্দরে মজুত মিডিয়াম চেন ফ্যাটি অ্যাসিড, শরীরে জমে থাকা ফ্যাট সেলেদের গলাতে শুরু করে। ফলে ওজন কমতে একেবারেই সময় লাগে না। তাই অতিরিক্তি ওজনের কারণে যদি চিন্তায় থাকেন, তাহলে নিয়মিত খালি পেটে ঘি খেতে ভুলবেন না যেন!